,

মুসলিম পরিবারের তিন খুঁটি

সময় ডেস্ক : মুসলমানদের বিবাহের খুতবায় প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা করা হয়। অতঃপর পবিত্র কোরআনের তিনটি আয়াত পাঠ করা হয়, যা যথাক্রমে সুরা নিসা, আয়াত : ১, সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ১০২ এবং সুরা আহজাব, আয়াত : ৭০-৭১। এই তিনটি আয়াতের মূল কথা হলো তাকওয়া বা আল্লাহভীতি। সুতরাং বিবাহের মূল খুঁটি তাকওয়া।
আল্লাহর ভয় না থাকলে দাম্পত্য জীবন একখণ্ড নরকে পরিণত হয়। সুতরাং বিবাহের পর স্বামী-স্ত্রীর করণীয় হলো, নিজেদের ঈমানকে শক্তিশালী করা। আল্লাহর আনুগত্য ও ইবাদতের চেষ্টা করা। আল্লাহর হুকুম পালনে যত্নবান হওয়া এবং সে ব্যাপারে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পরস্পরকে উপদেশ দেওয়ার ব্যবস্থা করা। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ রহম করুন এমন পুরুষ ব্যক্তির প্রতি, যে ব্যক্তি রাতে ঘুম থেকে ওঠে, অতঃপর সালাত আদায় করে এবং সে তার স্ত্রীকে জাগিয়ে দেয়, তারপর সেও সালাত আদায় করে; অতঃপর সে (স্ত্রী) যদি ঘুম থেকে উঠতে আপত্তি করে, তাহলে তার মুখমণ্ডলের ওপর হালকাভাবে পানি ছিটিয়ে দেয়। আর আল্লাহ রহম করুন এমন নারীর প্রতি, যে রাতে ঘুম থেকে ওঠে, অতঃপর সালাত আদায় করে এবং সে তার স্বামীকে জাগিয়ে দেয়, তারপর সেও সালাত আদায় করে; অতঃপর সে (স্বামী) যদি ঘুম থেকে উঠতে আপত্তি করে, তাহলে তার মুখমণ্ডলের ওপর হালকাভাবে পানি ছিটিয়ে দেয়। (আববু দাউদ, হাদিস : ১৩০৮)
স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যকার সম্পর্কটি পার্থিব ও বস্তুগত কোনো সম্পর্ক নয়; নয় চতুষ্পদ জন্তুর প্রবৃত্তির মতো কোনো সম্পর্ক; বরং তা হলো আত্মিক ও সম্মানজনক একটি সম্পর্ক; আর যখন এই সম্পর্কটি নির্ভেজাল ও যথাযথ হবে, তখন তা মৃত্যুর পর পরকালীন জীবন পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে। আল-কোরআনের ভাষায় : ‘স্থায়ী জান্নাত, তাতে তারা প্রবেশ করবে এবং তাদের মা-বাবা, পতি-পত্নী ও সন্তান-সন্ততিদের মধ্যে যারা সৎকাজ করেছে তারাও। ’ (সুরা : রাদ, আয়াত : ২৩)
দ্বিতীয়ত, সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে জীবন যাপন করা। যে জিনিসটি এ পবিত্র দাম্পত্য সম্পর্ককে হেফাজত করে, তা হলো পরস্পর সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে জীবন যাপন করা; আর এটা ততক্ষণ পর্যন্ত বাস্তবে পরিণত হবে না, যতক্ষণ না প্রত্যেক পক্ষ তার ভালো-মন্দ সম্পর্কে বুঝতে পারবে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘…তাদের সঙ্গে সৎভাবে জীবন যাপন করবে…। ’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১৯)
তৃতীয়ত, ভালো গুণ দেখে মন্দ গুণ উপেক্ষা। প্রতিটি মানুষের ভেতর ভালো-মন্দ উভয় গুণ আছে। সুতরাং ‘লং লাস্টিং’ দাম্পত্যজীবন চাইলে একে অন্যের ভালো গুণ দেখে মন্দ গুণ উপেক্ষা করতে চেষ্টা করবে এবং যথাসাধ্য কৌশলে একে অন্যকে সংশোধন করতে চেষ্টা করবে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘…তোমরা যদি তাদের অপছন্দ করো তাহলে এমন হতে পারে যে আল্লাহ যাতে প্রভূত কল্যাণ রেখেছেন তোমরা তাকেই অপছন্দ করছ। ’ (সুরা : নিসা, আয়াত : ১৯)


     এই বিভাগের আরো খবর